গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। কয়েক দফা বাড়িয়ে আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।
এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার চলতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিএসসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী (ইইসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার।
মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের বৈঠকে এ বছর করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দু’টি বাতিলের প্রাথমিক আলোচনা হয়।
এর ভিত্তিতে উভয় মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি সারসংক্ষেপ তৈরি হচ্ছে। আগামী রোববারের মধ্যে এটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হতে পারে।
তবে দুই সমাপনী বাতিল করা হলেও স্কুল খোলার পর বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে এ বছর মূল্যায়ন করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। এই ফলের ওপর ভিত্তি করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে মেধা বৃত্তি দেয়ার চিন্তা আছে। তবে এও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, যদি সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষার সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আমরা ন্যূনতম ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হবে তখনই তারা স্কুলে যাবে। যেহেতু কবে প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে তা আমরা জানি না। তাই একাধিক বিকল্প হাতে রেখে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে।”
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, করোনায় শিক্ষা খাতে ক্ষতি পূরণে বিশেষ করে সামনে কোন মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে সে সংক্রান্ত একটা খসড়া প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। মতামতকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এ নিয়ে এনসিটিবি কাজ করবে।
প্রতিবছর নভেম্বরে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনীতে প্রায় ৩০ লাখ এবং অষ্টমের দুই সমাপনীতে আরও ২০ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সব মিলিয়ে দেশের বিশাল সংখ্যক পরীক্ষার্থী এ দুই পরীক্ষায় অংশ নেয়।