আজ এক বছর হতে চললো কিন্তু আজও বিচার হয়নি ২৬ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের মিটিং এ হামলাকারী দুষ্কৃতকারীদের।
বিচারের বাণী নিবৃতে কাঁদে।
সেদিনের ঘটনার দৃষ্যপটে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৪ আগষ্ট চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নির্দেশে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে কার্যকরি কমিটির সভা আহবান করা হয়েছিল। সে সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ ইফতিখার সাইমুল চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম কায়সার, ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আখতার উদ্দিন চৌধুরী সহ আরও অনেক নেতা কর্মীরা। পূর্ব ঘোষনা মোতাবেক সেদিন নির্ধারিত মিটিং শুরু হবার সাথে সাথেই ধারালো অস্ত্র সস্ত্র সহকারে উচ্ছৃঙ্খল বহিরাগত বেশ কিছু দুষ্কৃতকারী সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা করে সভায়। হামলাকারীরা সভাস্হলে ঢুকেই চিৎকার দিয়ে বলে বলতে থাকে এখানে থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম কায়সার থাকতে পারবেনা, কারন তারা মহিউদ্দিন চৌধুরী অনুমোদন দেয়া কমিটি মানে না। এরপরই শুরু হয় তাদের তান্ডব। দুষ্কৃতকারী সন্ত্রাসীরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিড়ে নর্দমায় ফেলে দেবার মতো দৃষ্টতা প্রদর্শন করে। সভায় উপস্থিত মেহমানদের চেয়ার থেকে উঠিয়ে নাজেহাল করে, সভার আসবাবপত্র ভাংচুর করে। সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়ে উপস্থিত নেতা কর্মীরা।
এক পর্যায়ে তারা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু ও আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ ইফতিখার সাইমুল চৌধুরীর মতো সম্মানিত সিনিয়র নেতাদের সামনে টেবিলের উপর দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভুত অসৌজন্যমূলক আচরন করে। এক পর্যায়ে তারা ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আখতার উদ্দিন চৌধুরীকে নাজেহাল করে, তাঁর শরীরের কাপড় টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলে আহত করে। এভাবে ঘন্টা ব্যাপি সন্ত্রাসীরা তান্ডব চালিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করে। উল্লেখ্য যে, সে সভায় মহনগর সাধারন সম্পাদক জনাব আ.জ.ম নাছির আসার কথা থাকলেও তিনি আসেন নি।
পরদিন ওয়ার্ড আওযামী লীগের নেতৃবৃন্দ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আ.জ.ম নাছির এর সাথে দেখা করে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির স্বাক্ষরযুক্ত এবং মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান সম্পাদক মোঃ হোসেনের স্বাক্ষরযুক্ত দুটি অভিযোগ (সি সি ক্যামরার ফুটেজ সম্বলিত সকল প্রমাণাদি সহকারে) দলীয়ভাবে বিচারের জন্য মহানগর কার্যালয়ে দায়ের করেন।
অত:পর ২৭ আগস্ট/১৯ তারিখে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যকরী পরিষদের সভা আহবান করে কার্যকরী পরিষদের সর্বসম্মতি ক্রমে, সাংগঠনিক বিধি মোতাবেক হামলাকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্হা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলেও অদৃশ্য কারণে হামলার এক বছর হয়ে গেলেও আজো এ হামলার বিচার হয়নি।
এলাকার সিনিয়র নেতারা বলছেন, এ ধরনের নেক্কার জনক ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। কেউ বা কাহারা যাদের স্বার্থে আঘাত পরতে পারে তারাই বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে এবং অবশ্যই তারা রাজনৈতিক মাঠে প্রভাবশালী। যারা বা যাদের দ্বারা হামলা চালানো হয়েছে তারা বিএনপি জামাতের দালাল। কারন যারা বঙ্গবন্ধুর ছবিকে অপমানিত করতে পারে এবং মহিউদ্দিনের দেওয়া অনুমোদন অস্বীকার করে তারা স্পষ্ঠতই বিএনপি জামাতের দালাল। এ সব হাইব্রিড দালালদের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের ভিতর ঢুকাচ্ছে কিছু প্রভাবশালী স্বার্থান্বেসী মহল। যার কারনে অত্যাচারিত হচ্ছেন দলের ত্যাগী নেতারা, অন্যায় করলেও বিচার হয় না এসব বহিরাগত হাইব্রিডদের।
এ ব্যাপারে সেদিনের সভায় নাজেহাল হওয়া সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা আখতার উদ্দিন চৌধুরী কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, হামলার বিচারতো দুরের কথা ২৪ আগস্ট হামলার পর ২৫ সেপ্টম্বর/১৯ ঐ একই জায়গায় সভা আহবান করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। আমরা আশা করেছিলাম হয়তো এ সভায় হামালাকারীদের বিরুদ্ধে কোন একটি সিদ্ধান্ত আসবে। কিন্তু আমাদের সবাইকে নিরাশ করে সভায় সাধারন সম্পাদক আ.জ.ম নাছির হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা গ্রহন না করে উল্টো আমরা যারা হামলার শিকার হয়েছিলাম তাদেরই বকাঝকা করে নাজেহাল করেন। যা উপস্থিত সবাই খুব আশ্চর্য ও হতভম্ব হয়েছিলেন। কেন মহানগর সাধারন সম্পাদক এমনটা করলেন তা সবার কাছেই রহস্যের।
তিনি আরও বলেন, ২৪ আগস্ট/১৯ ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভায় হামলার টার্গেট যিনি ছিলেন সে থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল করিম কায়সারকেই মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক আ.জ.ম নাছির সাহেব এক অদৃশ্য কারণে সভাস্থল থেকে বাহির করে দিতে চেয়েছিলেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমরা কতটুকু বিচার পাব।
দৈনিক অপরাজিত বাংলা