সিনহা রাশেদ নিহতের ঘটনায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার বিএম মাসুদ, টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার, ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলী, অভিনেতা ইলিয়াস কোবরাসহ মোট আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
এছাড়া চুমকী কারান, প্রতীম কুমার দাশ, প্রতুশ কুমার দাশ, দিলীপেরও ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (১৭ আগস্ট) বিএফআইইউ থেকে সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একটি চিঠি পাঠিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে চিঠি ইস্যু করার দিন থেকে তিনদিনের মধ্যে স্থগিত করা হিসাবগুলোর নাম, নম্বর, স্থিতি এ সংক্রান্ত তথ্যাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম, হালনাগাদ লেনদেনের বিবরণী) পাঠাতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে যে ৮ জনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও তথ্য চাওয়া হয়েছে, তারা হলেন- এবিএম মাসুদ হোসেন, প্রদীপ কুমার দাশ, চুমকী কারান, প্রতীম কুমার দাশ, প্রতুশ কুমার দাশ, মো. লিয়াকত আলী, দিলীপ ও ইলিয়াস কোবরার।
হিসাবগুলোকে লেনদেন মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ক্ষমতাবলে ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিঠিতে প্রত্যেকের নামের পাশে জন্ম তারিখ ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে আজও কক্সবাজার কারাগারে থাকা হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামি বরখাস্ত হওয়া ইন্সপেক্টর লিয়াকত, ওসি প্রদীপ, ও এসআই নন্দদুলালকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি। পর্যায়ক্রমে রিমান্ডে থাকা সাত আসামিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তারা।
এর আগে গতকাল সকালে টেকনাফের শামলাপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন র্যাব মহাপরিচালক।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে। আর রামু থানায় একটি মামলা করে।
এ ঘটনায় নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ৫ আগস্ট টেকনাফের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে র্যাব তার তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে আসামি পুলিশ সদস্যদের রিমান্ডে নেয়।
আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক।
এর মধ্যে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পুলিশের চার সদস্য এবং এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গত শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র্যাব।
যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন–সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
এরইমধ্যে ব্যাংক হিসাব স্থগিতের এ নির্দেশনা এল।
দৈনিক অপরাজিত বাংলা