সাম্প্রতিক কালে দেশে ধর্ষনের ঘটনার রেশ টেনে ধরতে অবশেষে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হলো। ১২ অক্টোবর সোমবার শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড মন্ত্রিপরিষদ সভায় অনুমোদিত হয়েছে।
আজ ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার অধ্যাদেশটি জারি হবে ও আগামী নভম্বরের সংসদে অধ্যাদেশটি আইন আকারে পাশ হবে।
সমাজের সকলের সহযোগিতায় দেশ থেকে ধর্ষণ প্রতিহত করা সম্ভব হবে। যার ফলে ধর্ষণ ও নির্যাতন বন্ধ হবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
এদিকে ফরাসী প্রভাবশালী মিডিয়া Le Figaro তে ধর্ষনকারী দের সাজা “মৃত্যুদন্ড” নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন। খবরটি প্রকাশিত হবার ১ ঘন্টার মধে ৪১০৫ টি লাইক, ২১১ টি কমেন্ট এবং ৩৪৭ টি শেয়ার হয়েছে। কমেক্টের মধ্যে অধিকাংশ ছিল, “ফ্রান্সেও একই ধরনের আইন হওয়া উচিৎ!
সোমবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে নিজ দফতরে মন্ত্রীসভা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, যুগ্মসচিব মো মুহিবুজ্জামান ও প্রকল্প পরিচালক ড. আবুল হোসেন।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড মন্ত্রিপরিষদ সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আজকের এই আইনের সংশোধনীর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন আরো ধাপ এগিয়ে গেল।
এসময় আইন মন্ত্রীকেও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়া যারা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবিতে রাজপথে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে জোরালো বক্তব্য ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তাদেরকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের মাধ্যমে আমাদের এদেশ ধর্ষণ মুক্ত হবে। আমি চাইনা কোন একজন নারী বা শিশু ধর্ষিত হোক। সমাজ থেকে ধর্ষণ নির্মূল করতে পরিবার, সমাজ, বিভিন্ন মিডিয়া ও কমিউনিটির দায়িত্ব রয়েছে।
এই সংশোধনের মাধ্যমে কি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনতো মাত্র অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ নেই তাই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। আগামী মাসে অর্থ্যাৎ নভেম্বরে সম্ভবত সংসদ অধিবেশন বসবে তখন আমরা এই অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করতে একটি বিল নিয়ে আসবো। আগামীকালই অধ্যাদেশ হয়ে যাবে।
নতুন এই সংশোধনীতে অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে নতুন যে সংশোধনী আনা হয়েছে সেটা কাজ করবে। বিচারের যে দীর্ঘ প্রক্রিয়াটাও কমে আসবে বলে আশা করছি।
রাজনৈতিক ক্ষমতার সাথে ধর্ষণের সম্পর্ক বেশি সে পরিস্থিতিতে আইন করে কিভাবে দেশে ধর্ষণ কমবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা বলেন, “শুধুমাত্র আইন ও সরকার দিয়ে সব কিছু কিন্তু করা সম্ভব নয়। সরকারের সাথে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি তাহলে অবশ্যই হবে। ধর্ষক ধর্ষকই তার পরিচয় ধর্ষক। তার অন্যকোন পরিচয় থাকতে পারে না। এখানে পরিবারেরও দায়িত্ব অনেক রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি আইনের সঠিক প্রয়োগ, ইতিবাচক মনমানসিকতা ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে সমাজ ধর্ষণ মুক্ত হবে। যারা এ অপরাধের সাথে জড়িত হবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড বাংলার মানুষ অচিরেই স্বচক্ষে দেখতে পাবে।”
তিনি আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরই কিন্তু দেশে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার, বিচার ও ডিএনএ টেস্ট হচ্ছে যা অতীতের কোন সরকার করে নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলেই ধর্ষণের বিচার দ্রত সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সরকারের আমলে ধর্ষণের বিচার অতি দ্রুত সময়ে সঠিক বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে বলে আমি মনে করি।”
দেশের কিছু আলোচিত সমালোচিত রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নাম ধর্ষন অপরাধের ঘটনায় আসার পর সারাদেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে। সবার একটাই দাবী ধর্ষনের শাস্তি মৃত্যদন্ড ও সকল ধর্ষকদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনতে হবে।