ঢাকাশনিবার , ২৪ অক্টোবর ২০২০
  1. অনান্য
  2. অপরাধ ও আইন
  3. অভিবাসীদের নির্মম জীবন
  4. অর্থনীতি
  5. আত্মসাৎ
  6. আন্তর্জাতিক
  7. ইতিহাস
  8. উদ্যোক্তা
  9. এশিয়া
  10. কৃষি
  11. ক্যাম্পাস
  12. খেলাধুলা
  13. গণমাধ্যম
  14. গল্প ক‌বিতা
  15. চট্টগ্রাম বিভাগ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৮২ বছর বয়সেও নি‌জের জমা‌নো টাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা ক‌রে নি‌জের কাজ নি‌জেই ক‌রেন মান্নান ব্যাপারী।

মো. সুজন মোল্লা, বানারীপাড়া (বরিশাল) থেকে।
অক্টোবর ২৪, ২০২০ ১০:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় আব্দুল মন্নান বেপারী (৮২)। বয়সের ভারে অনেকটাই নতজানু হয়ে পড়েছেন। এই বয়সে এসেও তিনি মাত্র ৫ হাজার টাকার মূলধন নিয়ে ব্যবসা করছেন। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বানারীপাড়া প্রেসক্লাব থেকে প্রায় ১০০ গজ পূর্ব দক্ষিণ কোনে। পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ সংলগ্ন একটি ভাড়াটিয়া ঘরে মন্নান বেপারী তার ক্ষুদ্রতম ব্যবসা করছেন। তিনি তার দোকান ঘরে বসেই রান্না করে খান। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে ওখানে গেলে কথা হয় তার সাথে। কথায় কথায় বললাম নানাজি আপনার ব্যবসার মূলধন কতো হবে।

তিনি আপশোষের সুরে বললেন, ভাই কতো আর মালামাল নিয়ে ৫ হাজার টাকা হবে। এই বয়সে এসে ব্যবসা করছেন, আপনার ছেলে মেয়ে নেই, বললেন ৪ মেয়ে তাদেরকে অনেক আগেই বিবাহ দিয়েছেন। একটি ছেলে আছে সে ঢাকায় থাকে তার কোন খোঁজ-খবর রাখেন না। কয়েকদিন মেয়ে জামাতার কাছে থেকে সেখানেই খেয়েছেন ও থেকেছেন। তবে মেয়ের কাছে আর কতোদিন খাবেন তার জন্য নিজের দোকান ঘরেই রান্নার ব্যবস্থ্যা করেছেন। তার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকে আলুভাতে বা ডিম।

মন্নান বেপারীর গ্রামের বাড়ি বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে কচুয়া গ্রামে। তিনি জানান, সেখানে তাদের মাথা গোঁজার কোন জায়গা নেই। তিনি মারা গেলে যে তাকে দাফন করবে সে জায়গাটুকুও নেই এই অসহায় মানুষটির। শুনেছেন শেখের বেটি নাকি বয়স্কদের ভাতা দেন। তার জন্য অনেক দিন এর কাছে ওর কাছে ঘুরেছেন শেষে না পেয়ে হতাশ হয়ে যান। তবে ২০১৯ সালের প্রথম দিকে বাইশারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. ফরিদ হোসেন তার কাছ থেকে ৩ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা নেন বয়স্কভাতা পাইয়ে দিবে বলে। তারপরে আর ওই ইউপি সদস্যের নাগাল পননি অসহায় এই বৃদ্ধ লোকটি।

পরে উপজেলার সমাজসেবা অফিসেও তিনি খোঁজ নিতে গিয়ে ছিলেন তার নামে ভাতা হয়েছে কিনা জানতে। সেখানে গিয়ে দেখেন তার নামে ভাতা হয়নি। এখন সব আশা ছেড়ে দিয়ে মাত্র ৫ হাজার টাকার ব্যবসা করে কোনমতে জীবন নামের যন্ত্রনার গাড়িটি চালিয়ে নিচ্ছেন অনেক কষ্টে। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে যাওয়া বৃদ্ধ লোকটির আর কতো বয়স হলে তিনি ভয়স্কভাতা পাবেন এমনটাই জিঞ্জাসা ছিলো তার।

এ বিষয়ে বাইশারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার ওয়ার্ডে ৬টি বয়স্কভাতার  কার্ড বরাদ্ধ হয়েছিলো ওই ৬টি কার্ডের খরচ বাবদ আব্দুল মন্নান বেপারীর কাছ থেকে তিনি প্রথমে ৩ হাজার ২’শ টাকা নিয়েছিলেন। মন্নান বেপারী প্রথমে তার স্ত্রীর নামে বয়স্কভাতার কার্ড করিয়ে ছিলেন। স্ত্রী মারা যাবার পরে ভাতার ওই কার্ডটি তিনি তার নিজের নামে নিতে চাইলে তার কাছ থেকে পুনরায় কার্ড পরিবর্তনের জন্য আরও ৫ শত ৫০ টাকা নেওয়া হয় ২০১৯ সালের প্রথম দিকে। ২০২০ সালের শেষের দিকে এসেও মন্নান বেপারী তার নামে পরিবর্তিত কার্ড পাননি। তবে ইউপি সদস্য আরও জানান,তার নামে কার্ড হয়েছে। তিনি আরও জানান,মোট ৩ হাজার ৭শত ৫০ টাকার একটি টাকাও তিনি নিজে রাখেননি পরিষদের কয়েকজনকে ভাগ করে দিয়েছেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল অপরাজিতবাংলা ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন oporajitobangla24@yahoo.com ঠিকানায়।