প্রশ্ন হচ্ছে কোন হামলা জায়েজ, নাজায়েজ এটা ভিন্ন তর্ক, মানবিক বিবেচনায় হামাস ইজরায়েলে যে হামলা চালিয়ে নির্বিচারে নারী শিশু হত্যা করেছে,
তা কোন সভ্য মানুষের পক্ষে সমর্থন যোগ্য নয়।
তবে হামাস কেন হামলা চালালো, কে তাদের হামলা
চালাতে আগ্রহী করেছে, এইসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা আছে।
শুধু হামাস সন্ত্রাসী, হামাস জংগী পশ্চিমাদের এইসব
ঘোষনার সাথে দীর্ঘদিন ধরে একমত পোষন করে আসলেও,
হামাস হয়ে উঠার পিছনে পশ্চিমাদের অবদান কি
পশ্চিমারা অস্বীকার করতে পারবে?
গেল কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে ফিলস্তিনি ভুখন্ড
বিশেষ করে গাজা উপত্যকা নিয়ে বিস্তর জানাশোনার সৌভাগ্য হয়েছে।
ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী গাজা উপত্যকার দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার এবং এটি ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত।
সীমান্তের বড় অংশ রয়েছে ইসরাইলের সঙ্গে, বাকিটা মিসরের সঙ্গে।
প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে এখানে।
ফলে এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার একটি।
গাজার বাসিন্দাদের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভর করেন।
তাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রতিদিনের খাদ্যসহায়তার ওপর নির্ভর করে থাকেন।
এর মধ্যে ২০০৭ সাল থেকে ইজরায়েল গাজা উপত্যকা
অবরুদ্ধ করে রেখেছে, ফিলিস্তিনিরা কোন ধর্মের কোন গোত্রের বিষয়টা বিবেচনার বাহিরে রাখলেও,
কল্পনা করুন, ইজরায়েল গাজা উপত্যকায় অবরুদ্ধের
পাশাপাশি ২০০৭ সাল থেকে এই অঞ্চলের ২ লাখেরও
বেশি মানুষ বিদ্যুৎ ও পানি সংকটে রেখেছে এ ছাড়া, চিকিৎসা সেবা ও ওষুধের অপ্রতুলতাও ছিলো।
সেই গাজা উপত্যকায় হামাস জন্ম নিবে না,
তো কি বাইডেনের মত আধুনিক এক চোখা মানবিক মানুষ জন্ম নিবে?
আরো কল্পনা করুন, একটা অবরুদ্ধ কাটাতারের বেড়া,
এক পাশে আধুনিক জীবন মান, মাথা পিছু আয়
৪০ হাজার ডলারের বেশি, আরেক পাশে জনগ্য পরিবেশ
মোট জনসংখ্যার ৮০% মানুষের খাবার জোটে আন্তর্জাতিক
খাদ্য সহায়তা পেলে।
সেই পরিবেশে কার জন্ম নেওয়ার কথা?
বাইডেন ট্রাম্প খালেদা তারেকের নাকি হামাসের?
উত্তর পেয়ে যাবেন।
ফিলিস্তিনি ভুখন্ডে আজকে জন্ম নেওয়া শিশুটাও জানে তার বেচে থাকাটাই একটা মিরাক্কেল।
সেই ভুখন্ডে হামাস সন্ত্রাসী হলে, ওকে সন্ত্রাসী।
যাইহোক, আমেরিকার মানবতা, মানবিক আচার আচরন এক চোখে তেল আরেক চোখে নুনের মতো।
যে কারনে ক্রমান্নয়ে আমেরিকার মানবতা মানবিক আচার
আচরনের বিষয়ে, চোখ বন্ধ করে সাম্রাজ্যবাদ সমর্থন
করা আমাদের মতো কারো কারো কাছে এখন বিষের চেয়েও বিষময় হয়ে উঠেছে।
ফিলস্তিনিদের নিজেদের স্বাধীন ভুখন্ডের বিষয়ে
আমেরিকা যতোক্ষন পর্যন্ত উদার হয়ে না ভাববে,
ততোক্ষন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি ভুখন্ড বলেন, গাজা উপত্যকা
বলেন, এইসব এলাকা মানব পারমানবিক বোমার আস্তানা
হিসেবেই চলতে থাকবে, মাঝে যখন বিস্ফোরিত হবে,
তখন এমনই ইজরায়েলের সাধারন মানুষ মারা যাবে,
পালটা হামলা হিসেবে ইজরায়েলি আক্রমনে নিজেরা মরবে।
তাতে কি? কাটাতারের বেড়ার এক পাশের বিলাসবহুল
জীবনযাত্রা আরেক পাশে চরম নিকৃষ্ট জীবনযাত্রা, দুইটাই আতংকে থাকবে।